নিজের নাম তো বটেই, অনেক ক্ষেত্রে বাবা বা মায়ের নামও ভুল লেখা হয় সনদে। সার্টিফিকেটে নাম, জন্মতারিখ বা অন্য যেকোনো তথ্য ভুল লেখা হলে কী করবেন, কীভাবে তা সংশোধন করবেন তা বুঝতে পারেন না অনেকেই। দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। সার্টিফিকেটে নামের বানান বা জন্মতারিখ ভুল হলে গড়িমসি না করে যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

তাই কথা না বাড়িয়ে আসুন জেনে নিই কী করতে হবেঃ

১. নাম বা জন্মতারিখের ভুল সংশোধনের জন্য প্রথমে আইনজীবীর মাধ্যমে নোটারি বা এফিডেভিট করাতে হবে। বাংলাদেশে আইন অনুযায়ী ১০০ টাকার ২ টি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে তার মানে ২ পাতাতে লিখে আবেদন করতে হয়। পরে একটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীর সার্টিফিকেট নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, শাখা, পরীক্ষার সাল, পরীক্ষাকেন্দ্রের নাম, রোল নম্বর, বোর্ডের নাম এবং জন্মতারিখ উল্লেখ করে যা সংশোধন করতে চান (প্রার্থীর নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম বা জন্মতারিখ) তা সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হবে।

এফিডেভিটের জন্য লাগবেঃ

  • ১০০x২=২০০ টাকার স্ট্যাম্প
  • স্ট্যাম্পে (legal size page) প্রিন্ট নেয়ার জন্য, কম্পিউটারে বাংলা বা ইংরেজি আবেদনের ফরম্যাট
  • ১৮এর নীচে আপনার বয়স হলে, এফিডেভিটে সংযুক্ত করার জন্য আপনার অভিভাভকের এক কপি ক ছবি
  • ১৮এর উপরে আপনার বয়স হলে, এফিডেভিটে সংযুক্ত করার জন্য আপনার এক কপি  ছবি
  • ১৮এর নীচে আপনার বয়স হলে, এফিডেভিটে আপনার অভিভাভকের স্বাক্ষর
  • ১৮এর উপরে আপনার বয়স হলে, এফিডেভিটে আপনার আপনার স্বাক্ষর
  • উকিলের স্বাক্ষর, সিল
  •  নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর ও সিল
  • নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সিল আপনার ছবির উপরে থাকবে, অন্য পাতাতেও উপরে থাকবে। সবশেষে আরেকটি সিলে আপনার নথিভুক্তির নাম্বার ও তারিখ দেয়া হবে। নথিভুক্তির নাম্বারটি প্রথম পাতাতেও লিখা হয়।

এফিডেভিটে যা লিখা থাকে


২. বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আপনাকে যেতে হবে যে শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিয়েছেন সেই বোর্ডে। শিক্ষা বোর্ডের ‘তথ্য সংগ্রহকেন্দ্র’ অথবা ‘বৃত্তি বিভাগ’ অথবা অনলাইন থেকে নাম সংশোধনের আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে। আবেদনপত্র সংগ্রহের পর প্রার্থী স্বহস্তে নির্ভুলভাবে তা পূরণ করবেন। প্রার্থীর নাম, বাবার বা মায়ের নাম ও পদবী সংশোধনের ফি বাবদ প্রতি পরীক্ষার জন্য ৫০০ টাকা সোনালী ব্যাংকের যে কোনো শাখা হতে সোনালী সেবার মাধ্যমে জমা দিতে হবে। এ ফি সোনালী ব্যাংকের ডিমান্ড ড্রাফটের মাধ্যমে বোর্ডের সচিব বরাবর জমা দিতে হবে।

“ছাত্র/ছাত্রীর নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, পদবী সংশোধনের আবেদনপত্র”- শিরোনামের ফর্মটি শিক্ষাবোর্ড থেকে কালেক্ট করবেন। ফর্মটি দেখতে এমন।

ফর্মের নিচের দিকে দেখুন স্পষ্টভাবে লিখে দেওয়া আছে কোন কোন কাগজ আপনাকে জমা দিতে হবে।

৩. আবেদনপত্রের সঙ্গে নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড/প্রবেশপত্র/নম্বরপত্র/মূল সনদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক সত্যায়িত কপি, ব্যাংক ড্রাফটের মূল কপি, পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির কাটিং, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক সত্যায়িত পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবি এবং প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা নোটারি পাবলিকের কাছে নাম সংশোধন সম্পর্কে এফিডেভিট করে তার মূল কপি জমা দিতে হবে।

৪. নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের জন্য আবেদন গ্রহণের এক মাসের মধ্যে বোর্ড আবেদনকারী এবং তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষকসহ একটি মিটিংয়ে বসে। এ মিটিংয়েই প্রার্থীর আবেদন যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মিটিংয়ে বসার কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ দিন আগেই আবেদনকারীর ঠিকানায় চিঠি দিয়ে জানানো হয়। জরুরি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বোর্ডের চেয়ারম্যানের বিশেষ বিবেচনায় একদিনের মধ্যেও নাম ও জন্মতারিখ সংশোধন করার সুযোগ আছে। সাক্ষাৎকারে আপনাকে নাম পরিবর্তনের কারন সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হবে। সাক্ষাৎকার শেষে আপনার কারণগুলো যদি সচিবের কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হয় তাহলে আপনার নাম পরিবর্তন/সংশোধনের জন্য অনুমতি মিলবে। অনুমতি প্রাপ্তদের নাম সংশ্লিষ্ট বোর্ড ওয়েবসাইট প্রকাশ করবে।

শিক্ষা বোর্ডে যা যা দরকার হয়ঃ

    • (প্রতি নাম সংশোধনের জন্য একটি করে, যেমনঃ এসএসসির জন্য একটি, এইসএসসির জন্য একটি কপি)
    • এফিডেভিটের সত্যায়িত কপি
    • পত্রিকার বিজ্ঞাপন (মূল কপি দিতে পারলেই ভালো)
    • পূর্বনামের এসএসসি / এইসএসসি সনদের কপি
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • নাম সংশোধন আবেদন ফি মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিক ৫০০-৮০০
  • বয়স সংশোধন  আবেদন ফি মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিক ১০০০

সব কাজ হয়ে গেলে এমন একটা কাগজে আপনার নাম পাবেন এবং তা প্রিন্ট করবেন।

এই পাতাটি (যেটায় আপনার নাম আছে) ২৫ কপি ফটোকপি করবেন এবং বোর্ডে গেলে ২৫ কপিই সঙ্গে রাখবেন। এর পর থেকে আলোচনায় এটাকে আমরা ডাকবো “চিঠি” বলে।

তারপর?

আপনাকে আসল সার্টিফিকেটস জমা দিয়ে দিতে হবে।  কিভাবে দেবেন?

১। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দেওয়া

২। পরিবর্তনের জন্য জমা দেওয়া

১। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দেওয়া

আপনার আসল সার্টিফিকেট, অ্যাডমিট কার্ড এবং ট্রান্সক্রিপ্ট জমা দিবেন। রেজিস্ট্রেশন কার্ডটা বাদে বাকি তিনটা। তাই এটাকে আমরা এখন থেকে সার্টিফিকেট(+২) বলবো। আপনার যে প্রশ্ন উত্তরগুলো জানার দরকার, তাই এখানে আলোচনা করবো।

প্রশ্ন – ০১ । কোনটা কোথায় জমা দিবেন?

  • এসএসসির সার্টিফিকেট (+২) জমা দিবেন ৪ নং বিল্ডিংয়ের ছয় তলায়। সেই সঙ্গে দিবেন ২ কপি ‘চিঠি’র ফটোকপি। উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চেম্বারের পাশের দরজা দিয়ে ঢুকে পড়বেন। আই রিপিট, পাশের দরজা দিয়ে ঢুকে পড়বেন। উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের চেম্বারে ঢুকে যাবেন না যেন আবার!
  • এইচএসসির সার্টিফিকেট(+২) জমা দিবেন ৪ নম্বর বিল্ডিংয়ের পাঁচতলায়। একটা দশাসই কাউন্টার আছে ৫ তলায়। সামনে হয়তো ৪/৫জনের একটা লাইন — এখানে আপনি অবশ্যই ঢুকবেন না। সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার জায়গা ওটা নয়। বরং যেই ঘরটায় এসএসসি জমা দিলেন তার মেঝে ফুটো করে ফেললে একতলা নিচে যে ঘরে পড়তেন ঠিক সে ঘরে আপনি ঢুকবেন এবং সার্টিফিকেট(+২) জমা দেবেন। সেই সঙ্গে দিবেন ২ কপি “চিঠি”র ফটোকপি। আমি এভাবে বলছি কারণ আমার রুম নম্বর মনে নেই। কিন্তু এই দিকনির্দেশনা যথেষ্ট হওয়ার কথা।

প্রশ্ন – ০২ । জমা দিলেন, এবার কি করবেন? পরবর্তী ধাপগুলো কি?

    • সার্টিফিকেট(+০২) জমা দিবেন
    • জমা দিলেন  ধরুন “ক” তারিখে। আপনাকে তাহলে আসতে হবে “ক+৭” তারিখে। ধরুন, এই সোমবার আপনি কাগজ জমা দিয়েছেন। আগামী সোমবার আবারও আসবেন। একই ঘরে এসে দেখা করবেন। আপনাকে ওরা আপনার সার্টিফিকেট(+২) ফেরত দেবে। ওতে কলমের খোঁচায় ঠিক করা হয়েছে ভুলগুলোকে। সেই সঙ্গে রয়েছে উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাক্ষর এবং সীল।
  • বেরিয়ে যাওয়ার সময় গেটের সামনে, অনুসন্ধান থেকে ছয়টা সাদা ফর্ম নিন। ফর্মগুলো দেখতে এমন। পূরণ করুন, তিনটা এসএসসির জন্য। তিনটা এইচএসসির জন্য। জেএসসি যদি থাকে তাহলে তার জন্য আরো তিনটা। এই কাগজের তাড়াগুলো নিয়ে এবার সংশ্লিষ্ট স্কুল এবং কলেজে দৌড়াতে থাকুন। নিচের ঐ অংশে আপনাকে প্রিন্সিপাল বা হেডমাস্টারের সাইন এবং সিলসহ সত্যায়িত করতে হবে। কারণ, ঐ চেহারা মোবারক দেখেই আপনাকে ফাইনাল কাগজ দেওয়া হবে। এটা আপনি অবশ্যই এই সাতদিনের মধ্যে করে রাখবেন, যেহেতু আপনি এখন জানেন এটা করতে হবে।

পরিবর্তনের জন্য জমা দেওয়া

এবার আমি আপনাদের জানাবো “ক+০৭” তারিখে বা পরের সোমবার এসে কী করবেন সেটার ধাপগুলো। আপনার হাতে এখন আছে ৬ বা ৯টি এক্সট্রা কাগজ। ঐ যে ফর্মগুলো পূরণ করে নিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাক্ষরও নিয়ে এসেছেন নিশ্চয়ই? চমৎকার।

  • এবার টাকা জমা দেবেন ব্যাংকে। ৫ নম্বর কাউন্টারে চলে যান। আপনি চাইলে বাসা থেকেও করে নিয়ে আসতে পারেন। তবে বিভ্রান্তি এড়াতে এটা ৫ নং কাউন্টার বা বাইরের দোকান থেকে করে নিলেই ভালো করবেন। এবার আপনার ফর্মগুলো ধরিয়ে দিলেই (৫ নং কাউন্টার কিংবা দোকানদার) তারা আপনার সোনালি সেবার ফর্ম ফিল আপ করে দেবে। প্রতিটা কাগজের টুকরোর জন্য ৫৫৮ টাকা করে যাবে আপনার।
  • আপনার দৌড়াদৌড়ি চূড়ান্তভাবে শেষ হচ্ছে এই ধাপের সঙ্গে। এবার আপনি আবারও যাবেন ৪ নম্বর বিল্ডিংয়ে যেয়ে  কাগজ জমা দিবেন। সেই সঙ্গে দিবেন ১২ কপি “চিঠি”র ফটোকপি।   আপনাকে ওরা একটা তারিখ বলে দেবে। সেই তারিখে এসে শুদ্ধ বানানে আসল নামে সার্টিফিকেট নিয়ে যাবেন।

সময় কেমন লাগতে পারে? প্রায় তিন মাস

বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ সংশোধন:

এক এক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম এক এক রকম হওয়ার কথা।

সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে যা করবেনঃ

সার্টিফিকেট, নম্বরপত্র বা প্রবেশপত্র হারিয়ে গেলে প্রথমে আপনার এলাকার নিকটবর্তী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। জিডির একটি কপি অবশ্যই নিজের কাছে রাখতে হবে। এরপর যেকোনো একটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে নাম, শাখা, পরীক্ষার কেন্দ্র, রোল নম্বর, পাসের সাল, বোর্ডের নাম এবং কিভাবে আপনি সাটিফিকেট, নম্বরপত্র অথবা প্রবেশপত্র হারিয়েছেন তা সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হবে।

থানায় জিডি ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর যে বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিয়েছেন সেই শিক্ষা বোর্ডে আপনি চলে যান। শিক্ষাবোর্ডের ‘তথ্যসংগ্রহ কেন্দ্র থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে নির্ভুলভাবে পূরণ করুর। এরপর নির্ধারিত ৫০০ টাকা ফি সোনালী ব্যাংকের ডিমান্ড ড্রাফটের মাধ্যমে বোর্ডের সচিব বরাবর জমা দেন। আবেদনপত্রের সঙ্গে মূল ব্যাংক ড্রাফট, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির কাটিং ও থানার জিডির কপি জমা দিতে হবে।মনে রাখবেন টাকা জমা হওয়ার পর আপনার আবেদন কার্যকর হবে।

সার্টিফিকেট নষ্ট হলে যা করবেনঃ

নষ্ট হয়ে যাওয়া সনদপত্র/নম্বরপত্র/একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের অংশবিশেষ থাকলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে না বা থানায় জিডি করতে হবে না। এ ক্ষেত্রে আবেদনপত্রের সঙ্গে ওই অংশ বিশেষ জমা দিতে হবে। তবে সনদে ও নম্বরপত্রের অংশ বিশেষে নাম, রোল নম্বর, কেন্দ্র, পাশের বিভাগ ও সন, জন্ম তারিখ ও পরীক্ষার নাম না থাকলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

পিএসসি সার্টিফিকেট সংশোধন ,সার্টিফিকেটের নাম সংশোধন ফরম, এস এস সি সার্টিফিকেট নাম সংশোধন, মাধ্যমিক সার্টিফিকেটে নাম সংশোধনের আবেদনপত্র ঢাকা বোর্ড, ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট সংশোধন, সার্টিফিকেটে ভুল সংশোধন, এস এস সি সার্টিফিকেট বয়স সংশোধন, সার্টিফিকেটে মায়ের নাম সংযোজন

Courtesy:

https://www.dhakaeducationboard.gov.bd 

https://www.dhakaeducationboard.gov.bd/index.php/sonali/

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এর ফরমসমূহ

https://www.germanprobashe.com/archives/13935
https://www.prothomalo.com/life-style/article/593491/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%A8-%E0%A6%AF%E0%A7%87%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87